Saturday, September 01, 2018

ছেলেদের মন খারাপ করতে হয় না !

 

                     ইনজামাম 



ছেলেদের থেকে মেয়েদের মায়া বেশি। ভালোবাসা বেশি। কিন্তু কেন জানি আমার মনে হয়, একচেটিয়া মেয়েদের প্রশংসা করতে করতে আমরা অনেকেই হয়তো ছেলেদের ভালো দিকগুলো দেখার চেষ্টা করিনা। ছেলেরাও তাই মেনে নেয়। কিচ্ছু বলে না কাউকে। তারা চুপ থেকে তাদের সব দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করে যায়। খুব অল্পসংখ্যক ছেলে আছে, যারা তাদের সম্পূর্ণ জীবনটা শুধু নিজের জন্য বাঁচে। অধিকাংশ দিনই পার করে অন্যের আবদার-শখ মেটাতে গিয়ে। আমরা মেয়েরা জীবনটাকে যত কঠিন মনে করি, জীবনটা হয়তো ততটা কঠিন নয়। আমাদের কখনো বলা হয় না ভালো চাকরি করতে হবে, তোমার আয়ের ওপর নির্ভরশীল হয়ে উঠবে আরো পাঁচটি মানুষ। তাদের থাকা-খাওয়া তোমাকেই দেখতে হবে। ছেলেদের মন খারাপ করতে হয় না। কাঁদতে হয় না। ছোটবেলায় আঘাত পেয়ে যখন কান্না আসত, তখন তাদের চুপ করিয়ে দেওয়া হতো। বলত, আরে তুমি মেয়ে নাকি যে কাঁদ! অসহায় পুরুষ মানুষ। না আছে মন খারাপের স্বাধীনতা, না আছে কাঁদার। তাদের কষ্ট হয়, কান্নাও পায়; কিন্তু তারা তাদের অনুভূতি লুকাতে জানে। তাদের প্রতিটি দিন কষ্ট করতে হয়। ভালো রেজাল্ট থেকে ভালো চাকরি পর্যন্ত একটা দিন তাদের এমনি এমনি কাটে না। চাকরি পেয়েও শান্তি আছে কি? ছেলে চাকরি পেয়েছে এবার সংসারের হাল ধরবে। পুরুষের জীবনে শুরু হয় নতুন অধ্যায়। আজ থেকে সে বাঁচবে তার নিজের পরিবারের জন্য। সব সমস্যা কি এখানেই শেষ? না অপেক্ষা করুন, আসল অধ্যায়ই তো এখনো শুরু হয়নি। এবার তো তার বিয়ে হবে। বউ আসবে। বউয়ের সব আবদারও আসবে বউয়ের সঙ্গে। আরো একটা অধ্যায় আজ শুরু হবে তার। এই সমাজে আদর্শ স্বামী হওয়ার অধ্যায়। বিয়ের পর বছর দুই পার হতে না হতেই সে স্বামী থেকে হয়ে যায় বাবা। তার সব চেয়ে পছন্দের চরিত্র এটা। এই ডাকটা শোনার জন্য সে সব পারবে। তার সন্তানের সব খুশি, আনন্দ নিয়েই তার এবারকার যাত্রা। এবারের যাত্রাটা যত সুন্দর, যত মধুর ততই দায়িত্বের। আর নিজের জন্য বাঁচার সময় কই! দায়িত্বের ভারে সময় পার করতে করতেই জীবনের ৫০টা বছর পার হয়ে যায়। একতলা থেকে দোতলায় উঠতে গিয়েই হাঁটু ব্যথা হয়ে যায়। পাহাড় পাড়ি দেবে কিভাবে! আমার কথাগুলো কারো মিথ্যা মনে হলে বাড়ির আলমারি খুলে দেখত বাবার তাকে কয়টা শার্ট আর মায়ের তাকে বাবার দেওয়া কয়টা শাড়ি! তোমার জামাগুলোর হিসাব করতে ভুলো না, তোমার বাবা-মায়ের জামা-শাড়ির থেকেও অনেক বেশি। কারণ তাদের দুজনের সব শখ-আহ্লাদ এখন তোমাকে ঘিরেই। আমার ভালো লাগে যখন আমি দেখি কোনো ছেলে নিজের জন্য কিছু করছে। চাকরি থেকে রিটায়ারের পর আর সুযোগ থাকলেও ইচ্ছা থাকে না। মেয়েদের উদ্দেশ করে বলছি, পরিচিত কোনো ছেলে নিজের জন্য কিছু করলে রাগ করার কিছু নেই। হিসাব করে দেখো, তোমার জন্যই তো তার সব চেষ্টা। কিছুটা সময় তার নিজের জন্য রাখতে দাও। তার পরও আমি বলব, বিয়ের পরও নিজের জন্য বাঁচে, কিন্তু সহধর্মিণীকে সঙ্গে নিয়ে। এই বৈশিষ্ট্যগুলোর বাইরে যারা হিংস্র, অমানবিক পুরুষের কথা ভেবে আমার লেখা অর্থহীন ভাবছে, তাদের বলি, আমি পুরুষের কথা বলেছি কাপুরুষের কথা না।





তারিখ-০২-০৯-১৮,রাত-০২:২৭

(ফেসবুক থেকে পাওয়া ।)









No comments:

Post a Comment

বাকি জীবনটা তোমার হাত ধরে চলতে চায় ।

আজকের দিনটা অন্য দিনের মতো না ।  কেননা বারটা ছিল  12/07/19 সপ্তাহে সেরা দিন শুক্রবার আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো মাতোয়ারার সাথে দেখা হওয়া । ...